আজ একটি বিষয় নিয়ে লিখতে বসলাম। নাস্তিকদের কিছু ভন্ডামি প্রশ্নের উত্তর দিলাম। তার আগে আমি বলে নিচ্ছি । হেফজত ইসলামের ঢাকা অভিমুখে যাত্রা সফল করুন। কারন সরকার সবাইকে কলা দেখাচ্ছে আর খাওয়াচ্ছে মুলা। তাই নাস্তিকদের বিরুদ্ধে এখনই সময় সোচ্ছার হওয়ার ।
নাস্তিকদের দাবি অনুযায়ী পৃথিবীতে অনেক ধর্ম আছে, কিন্তু তারা কোনো ধর্মেই বিশ্বাস করে না। ধর্মে অবিশ্বাসের পক্ষে তারা যে যুক্তিগুলো দেয় সেগুলো মোটাদাগে মোটামুটি এরকম [নিজ ভাষায়]:
[১] মুসলিমরা এরোপ্লেন দিয়ে টুইন টাওয়ার উড়িয়ে দিয়ে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে। তারা সুইসাইড বোম্বিং-এর মাধ্যমেও নিরীহ মানুষ হত্যা করে। তাদের এই অনুপ্রেরণা আসে স্বয়ং কোরআন থেকে। {এটি আধুনিক নাস্তিকদের দেবতুল্য পীর রিচার্ড ডকিন্সের #১ যুক্তি}
ভালো কথা। কিন্তু অন্য সব ধর্মে বিশ্বাসীরা তো এরোপ্লেন দিয়ে টুইন টাওয়ার উড়িয়ে দিয়ে কিংবা সুইসাইড বোম্বিং-এর মাধ্যমে নিরীহ মানুষ হত্যা করে না, করে কি? ফলে অন্য কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে সমস্যা কোথায়? জবাব নেই। তাহলে দেখা যাচ্ছে তাদের এই ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
[২] ইসলামে বিশ্বাসীরা বিন লাদেন, আল-কায়েদা, জেএমবি, বাংলা ভাই, রাজাকার, ইত্যাদি হয়।
ভালো কথা। এগুলোও তো শুধু ইসলামের সমস্যা। ফলে অন্য কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে সমস্যা কোথায়? জবাব নেই। এক্ষেত্রেও তাদের ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
[৩] ধর্মগ্রন্থে অনেক অমানবিক কথাবার্তা ও অসঙ্গতি আছে।
“ধর্মগ্রন্থে অনেক অমানবিক কথাবার্তা ও অসঙ্গতি আছে” বলতে মূলত কোরআন-হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, কিছুটা লোক দেখানো বাইবল, ও কিছুটা লোক দেখানো হিন্দু ধর্মগ্রন্থের কথাই তাদের লেখা থেকে জানা যায়। কিন্তু এগুলো ছাড়াও তো আরো অনেক ধর্মগ্রন্থ আছে – সেগুলোর কোনো একটিতে বিশ্বাস করতে সমস্যা কোথায়? জবাব নেই। অতএব, তাদের ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
[৪] আব্রাহামিক ধর্মে আদম-হাওয়া মিথ আছে – যে মিথকে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব ভুল প্রমাণ করে বাতিল করে দিয়েছে।
ভালো কথা। আব্রাহামিক ধর্মের ’আদম-হাওয়া মিথ’কে না হয় বিবর্তনবাদ নামক এক চরম ইডিয়টিক ও হাস্যকর তত্ত্ব ভুল প্রমাণ করে বাতিল করে দিয়েছে। কিন্তু হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, জৈন ধর্ম, ও শিখ ধর্ম সহ অন্যান্য ধর্মে তো ‘আদম-হাওয়া মিথ’ বলে কিছু নাই। তাহলে তারা এই ধর্মগুলোর কোনো একটিতে বিশ্বাস করে না কেনো? জবাব নেই। অতএব, তাদের ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
[৫] ইসলামের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করলে মুসলিমরা কল্লা কাটার জন্য তেড়ে আসে।
ভালো কথা। কিন্তু অন্য কোনো ধর্মের নবী বা দেবতাকে নিয়ে কটূক্তি করা হলে সেই ধর্মের অনুসারীরা তো কল্লা কাটার জন্য তেড়ে আসে না – এটা নাস্তিকদেরই দাবি। তাহলে অন্য কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে সমস্যা কোথায়? জবাব নেই। অতএব, তাদের ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
[৬] ইসলামে মুরতাদ তথা ইসলাম ত্যাগীদেরকে হত্যার কথা বলা আছে।
ভালো কথা। কিন্তু অন্য কোনো ধর্মে [বিশেষ করে হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, ও শিখ ধর্ম] তো ধর্ম ত্যাগীদেরকে হত্যার কথা বলা নেই। তাহলে অন্য কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে সমস্যা কোথায়? জবাব নেই। অতএব, তাদের ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
[৭] ইসলাম মুক্তচিন্তা ও নাস্তিকতা বিরোধী।
ভালো কথা। কিন্তু হিন্দু ধর্মে তো আস্তিকতা, নাস্তিকতা, নিধার্মিকতা, সহিষ্ণুতা, ও মুক্তচিন্তা [কেউ চাইলে যাচ্ছেতাই বিশ্বাস বা অবিশ্বাস করতে পারে] সহ সবই আছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এমনকি এই দাবিগুলো কিছু নাস্তিকও করছে। তাহলে হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করতে তাদের সমস্যা কোথায়? জবাব নেই। অতএব, তাদের ভণ্ডামী যুক্তি মাঠে মারা গেল।
বেশী উদাহরণ দিয়ে পাঠকদের মূল্যবান সময় নষ্ট করার ইচ্ছা নাই। তবে যুক্তিবাদী পাঠক ইতোমধ্যে নাস্তিকদের ভণ্ডামী যুক্তিগুলো বুঝে গেছেন নিশ্চয়। এভাবে তাদের প্রতিটা ‘যুক্তি’কেই ভণ্ডামী যুক্তি প্রমাণ করা সম্ভব।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে নাস্তিকদের সামনে এত এত অপশন থাকতেও তারা কোনো ধর্মেই বিশ্বাস না করার কথা বলে কেনো? এই প্রশ্নের উত্তর আশা করি সবাই বুঝে গেছেন। নাস্তিক দাবিদারদের মধ্যে মূলত দুটি গ্রুপ আছে:
১. ধূর্ত গ্রুপ – এরা অসৎ উদ্দেশ্যে মুখে নাস্তিকতার বুলি আউড়ায়, নাস্তিকতাকে একটি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।
২. নির্বোধ গ্রুপ – এদের নাস্তিকতা নির্ভর করে ধূর্ত গ্রুপের উপর। ধূর্ত গ্রুপ যতদিন পর্যন্ত পেছন থেকে এদের পিঠ চাপড়ে দেবে ততদিন পর্যন্ত এরা নাস্তিক থাকবে।
No comments:
Post a Comment